ভুল বা সঠিক সিদ্ধান্ত

জীবনে ভুল বা সঠিক সিদ্ধান্ত বলে কিছু নেই।
এটা শুধুই সিদ্ধান্ত।
আবেগ আর বিবেকের মিশেলে সেই সময়ে যেটাকে উপযুক্ত মনে হবে সেটাকেই অনুসরণ করা উচিত।
তবে সব সময় মাথায় রাখতে সিদ্ধান্ত নেয়ার পর আর বিকল্প ভাবা যাবে না, পস্তানো যাবে না, আফসোস করা যাবে না।
সিদ্ধান্তটিকে মেনে নিয়ে মনে নিয়ে এগিয়ে যাওয়াই উত্তম।
মনে রাখতে হবে প্রতিটি সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে সুযোগ এবং ঝুঁকি দুটোই রয়েছে। এবং ঝুঁকি এবং সুযোগের মধ্যেকার সম্পর্ক ব্যস্তনুপাতিক। সুযোগ যতো বেশি ঝুঁকিও ততো বেশি।
আজ যেটা এই সময়ে, এই অবস্থানে দাঁড়িয়ে সঠিক মনে হচ্ছে – সেটা ভুল হতে পারে ৪ টি বিষয়ের ভিত্তিতে –
১. ব্যক্তি বিশেষে- আমার কাছে যেটা ভুল, আপনার কাছে সেটাই সঠিক
২. সময় পরিবর্তনে- আজকে যেটা সঠিক, সেটাই কাল ভুল প্রমানিত হবে
৩. স্থান বিশেষে- যেটা ঢাকার ক্ষেত্রে ভুল, সেটাই গ্রামে সঠিক
৪. অভিজ্ঞতা / দৃষ্টিভঙ্গির বিচারে – আমার কাছে যা সঠিক তা আমার বাবার কাছে নিতান্তই ছেলে মামুষি
তাই সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে নিজের সাথে বোঝাপড়াটা খুবই জরুরী। আমরা পরামর্শ নিতেই পারি- বিকল্প ভাবনার ক্ষেত্রে। তবে দিন শেষে সিদ্ধান্ত আমারই।
ঝুঁকি এবং সুযোগ নিজেরই।
তাই চোখ বন্ধ করে, মন এবং মস্তিষ্ককে শান্ত রেখে বিসমিল্লাহ বলে শুরু করা উচিত।

নিজেকেই ভালোবাসো

নিজেকে ভালোবাসতে পারাটাও একটা আর্ট। নিজেকে ভালোবাসতে হয় প্রথম প্রেমের মতো। প্রথম প্রেমিকার মতো, খেয়াল রাখতে হয় আদরে আবেগে। প্রেমিকার সকল ভালোলাগা মন্দলাগা বিষয়গুলো যেমন খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে জানতে হয়। তেমন করেই জানতে হয় নিজের ভালোলাগা, খারাপ লাগা, পছন্দ-অপছন্দ।

 

নিজেকে ভালোবাসা মানে নার্সিস্ট হওয়া না। নার্সিস্ট তো শুধু নিজের বাহ্যিক সৌন্দর্যের প্রেমে পড়ে। কিন্তু নিজেকে ভালোবাসা তার চেয়ে বেশি কিছু। নিজের বাহ্যিক সৌন্দর্য এর সাথে মনের এবং আভ্যন্তরীন অঙ্গ প্রতঙ্গের একটা সুন্দর সিনক্রোনাইজেশনই হলো নিজেকে ভালোবাসা।

 

ভালবেসে নিজেকে উপহার যেমন দিতে হয়। তেমনি শাসন করতে হয় খুব বেশি ইমোশনাল হলে। প্রিয়ার অভিমান ভাঙানোর মতো করে নিজের জড়তা এবং শংকাগুলোকেও ভেঙে চুরমার করে দিতে হয় সু-কৌশলে। নিজেকে আস্তে আস্তে প্রকাশ করতে সমাজের সকলের লাছে নিজের প্রেমিকার মতো করে।

 

নিজেকে ভালোবাসতে জানাটাও একট দক্ষতা। প্রেমিকার শারীরিক সৌন্দর্যের প্রতি যেমন থাকে আকর্ষণ, মোহ টান। তেমন করে নিজের শরীরটাকে চেনাটাও খুব জরুরী। শরীরের খুঁটিনাটি প্রতিটি ইঞ্চি ইঞ্চি চিনে রাখতে হয়। তাদেরকে তোষামোদ করতে হয়। শানিত করতে হয়, চকচকে ধারালো। তবেই সে হয়ে ওঠে আকাংখিত।

 

শরীরের মতো মনটাও খুব খুব গুরুত্বপূর্ণ। মনটা যদি বিশৃঙ্খল থাকে, গোমড়ামুখো হয়ে থাকে প্রেমীর মুখের মতো- তাহলে শরীর কিংবা বাহ্যিক সৌন্দর্য কোনটায় সঠিকভাবে কাজ করবে না। তাই মনটাকে সুস্থ্য রাখা, শান্ত রাখাটাও কম জরুরী নয়।

 

নিজেকে ভালোবাসার মধ্য দিয়েই খুঁজে পাওয়া যায় নিজের অস্তিত্ব। খুঁজে পাওয়া যায় জীবনের অর্থ। জীবন হয়ে ওঠে আনন্দময়। ভালোবাসায় পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে নিজের জীবন। নিজের চারপাশ। তখন চারপাশের মানুষগুলোও আপনাকে ভালোবাসতে শুরু করে। সফলতা ধরা দেয় নিজের তালুতে। আর নিজে হয়ে ওঠা যায় একজন আনন্দময় মানুষ হিসেবে।

 

 

০৯/০৪/২০২১

কক্সবাজার